❒জুলাই বিপ্লব:-
“জুলাই বিপ্লব”—বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এটি একটি জাতির গণজাগরণ ও সংগ্রামের মহাকাব্যিক চিত্র। ২০২৪ সালের জুলাই এবং আগস্ট মাসের আন্দোলন শুধু একটি দাবি পূরণের লড়াই ছিল না; এটি ছিল জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ঐতিহাসিক বিপ্লব। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে গণজাগরণের সূচনা হয়, তা পরিণত হয় স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে।
শহীদদের রক্তে রাঙানো রাজপথ, সাহসী স্লোগানে মুখরিত ছাত্র-জনতা এবং এক নতুন সূর্যের প্রত্যাশা—এই বিপ্লবের প্রতিটি অধ্যায় আমাদের জাতীয় চেতনার অংশ।
এই বইটি সেই সংগ্রামের ধারাবাহিক বিবরণ, যেখানে উঠে এসেছে আন্দোলনের প্রতিটি ধাপ। “তুমি কে, আমি কে? রাজাকার, রাজাকার” শ্লোগান যেমন উত্তাল করেছিল রাজপথ, তেমনি রংপুরে আবু সাঈদের শাহাদাত এবং শহীদদের আত্মত্যাগ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে প্রেরণা দিয়ে যাবে। কারফিউর নিস্তব্ধ দিনগুলো, ইন্টারনেট বন্ধ করে আন্দোলন দমনের অপচেষ্টা এবং সাজোয়া যান থেকে ফেলে দেওয়া তরুণের মৃত্যু এক নির্মম অধ্যায়ের সাক্ষী।
এ বিপ্লবের সাফল্যের পেছনে ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব, ছাত্র সমাজ, রিকশাচালক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সাহসিক ভূমিকা এবং ইসলামী ছাত্র সংগঠন ও আলেম সমাজের দিকনির্দেশনা।
“জুলাই বিপ্লব” বইটি একটি দালিলিক গ্রন্থ বললেও ভুল হবে না। প্রতিটি তথ্য জাতীয় পত্রিকা হতে সংগ্রহ করা এবং নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে যাচাই করা। এখানে শুধুমাত্র ইতিহাস নয়, বরং শহীদদের আত্মত্যাগ, নেতৃত্বের দায়িত্বশীলতা এবং সাধারণ মানুষের অক্লান্ত প্রচেষ্টার গল্প রয়েছে। সেনাবাহিনীর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, গণভবন অভিমুখে গণমিছিল এবং ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘটনাগুলো এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। এর চূড়ান্ত ফল ছিল অন্তবর্তী ড. ইউনুস সরকারের অভিষেক এবং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন।
এই বই কেবল অতীতের স্মৃতি সংরক্ষণ নয়, বরং একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য প্রেরণা। “জুলাই বিপ্লব” আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন কীভাবে একটি জাতিকে পুনর্নির্মাণের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এটি শুধুই একটি বই নয়, বরং একটি আত্মপরিচয়ের আয়না, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা এবং মানবিক মর্যাদার জন্য লড়াই করার শক্তি জোগাবে।
❒১০০ শহীদের গল্প:-
বিপ্লব কখনো এমনি এমনি আসে না। প্রতিটি বিপ্লবের পেছনে থাকে বেদনার ইতিহাস, ত্যাগের কাহিনি এবং রক্তের সিঁড়ি বেয়ে এগিয়ে যাওয়া এক অদম্য সংগ্রাম। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবও তেমনই এক অধ্যায়। প্রায় দুই হাজার শহীদের আত্মত্যাগ এবং ১৮ হাজারের বেশি আহত মানুষের নিঃস্বার্থ সংগ্রামের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি ফ্যাসিবাদ মুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা। কিন্তু আজ, মাত্র কয়েক মাস পর, আমরা কি সেই স্বপ্ন ভুলতে বসেছি? শহীদদের রক্ত আর আহতদের ত্যাগ কি আমাদের কাছে শুধুই অতীতের গল্প? এই বিপ্লবের আদর্শ এবং স্পিরিট আমাদের হৃদয়ে ধারণ না করলে সেই ইতিহাস ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবে।
এই চিন্তা থেকেই জুলাই বিপ্লবে “১০০ শহিদের গল্প” রচনার প্রয়াস। এই বইয়ে আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি সেই সব মর্মস্পর্শী ১০০ জন শহিদের বীরত্বগাথা, যারা আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের কাহিনিগুলো আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ার দিকনির্দেশনা। আমাদের দায়িত্ব শুধু এই গল্পগুলো সংরক্ষণ করা নয়, বরং তা ছড়িয়ে দেওয়া—পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কারণ, জাতি তার ইতিহাস ভুললে পথ হারায়। আশা করি, এই বই পাঠকদের অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং আমাদের সেই আদর্শের প্রতি আরও একবার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে শেখাবে।
❒ মৃত্যু যখন উপহার
মানবজীবনের সবচেয়ে অনিবার্য সত্যের নাম মৃত্যু। মানুষ মাত্রই এর স্বাদ তাকে আস্বাদন করতেই হবে। প্রশ্ন হচ্ছে এই মৃত্যু কেমন হওয়া উচিত? মৃত্যু বরণ করা মাত্রই কি আমরা জান্নাতে চলে যাবো? একটি সুন্দর মৃত্যুর জন্য আমাদের জীবনাচার কেমন হওয়া উচিত? জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের জন্য আমাদের কোন পথে জীবন পরিচালনা করা উচিত? সেসব বিষয় নিয়েই লিখিত এ বইটি।
এ বইতে এমন কিছু গল্প, কুরআন ও হাদিসের বিশুদ্ধ আলোচনা সংযোজন করা হয়েছে, যা প্রত্যেক মানুষকে দ্বীনি জীবন গঠনে প্রেরণা যোগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ইনশাআল্লাহ।
Reviews
There are no reviews yet.