ইসলামে আল্লাহর আদেশই শেষ কথা। তাই জনগণের শাসন ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যশীল হলেও তা ইসলামিক অনুশাসন নয়, এ কথা অনস্বীকার্য। বহুদলীয় সংগঠনের ব্যাপারে যেমন ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, তেমনি শরীয়াহভিত্তিক শাসনের ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠনের জোরালো অবস্থান রয়েছে। যার যার দিক থেকে শক্ত পক্ষালম্বন নীতি ও মতামত নিয়ে বিস্তর আলোচনা বেশ উপভোগ্য।nপাশ্চাত্যে গণ;;তন্ত্র এত জনপ্রিয় কেন? প্রশ্নের উত্তর নিয়ে মাথা এর আগে খাটাইনি। সত্যিই তো কেন? একটি অধ্যায়ে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি। মানসিক দাসত্বের চুক্তি।nইসলামি আদর্শের বহু নেতা ও কিংবদন্তীরাও বারবার একই প্রসঙ্গের যে দুয়ার খুলেছেন, তাসের ঘরের মত সব আলোচনা আবার এলোমেলো হয়েছে। সংশয় ও সন্দেহও বাসা বেধেছে। লেখক সেসব সংশয়ের নিষ্পত্তি করেছেন, হাদিসের ব্যাখ্যা ও কুরআন থেকে দলীল দিয়ে বিভিন্ন ত্রুটিবিচ্যুতি নিয়ে পর্যায়ক্রমে লিখেছেন। যেহেতু বিশ্ব দরবারে ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক আইন পুরোপুরিভাবে নেই বললেই চলে সেক্ষেত্রে মুসলিমদের করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে সুদুপদেশ দিয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে বিকল্প বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন। মানবরচিত যেকোন শাসন ও ব্যবস্থাপনা, যা দ্বীন ও ধর্মকে রাষ্ট্র ও জীবনের সকল বিষয় থেকে আলাদা করে দেয়, তা দুশ্চিন্তার বিষয় বৈ কী। কিন্তু বহুজাতিক রাষ্ট্রব্যবস্থা কি ইসলামের অংশ; যা ইসলাম থেকেই এসেছে? এই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিতের উত্তর দিয়েছেন লেখক গোটা বইটিতে।nএক বৈঠকে নয়, বরং সময় নিয়ে পড়ার মতো গ্রন্থ। তাছাড়া সব ধরনের পাঠকের উপযোগী নয়। কারণ, বহু স্টেটমেন্ট, দালীলীক আলোচনা, টার্মের উপস্থাপন, ঐতিহাসিক ঘটনা সর্বসাধারণের জন্য সহজপাঠ্য নয়। বিষয়ভিত্তিক সাধারণ ধারণা ও পাঠের সময় রিসার্চ করে পড়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। টীকা, নোট, ছোটখাট পয়েন্টও এক্ষেত্রে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পুরো বইটির বিষয়বস্তু একটির সাথে একটি জড়িত। ধাপেধাপে আলোচনা করায় প্রাসঙ্গিকতা অক্ষুন্ন রয়েছে। এটি অন্য সাধারণ বইয়ের কাতারে না ফেলে গবেষণাধর্মী বইয়ের ঘরানায় বিবেচ্য। বিশ্ব রাজনীতির বিষয়ে জানার আগ্রহ জাগানিয়া ও অগ্রগণ্য গ্রন্থ। মনযোগ ধরে রেখে অল্প করে পড়লে পুরো বইটি ভালোভাবে বোঝা যাবে। তাছাড়া, প্রথম দিকে স্লো মনে হলেও টার্মগুলো আয়ত্তে এসে গেলে অনুবাদে মৌলিকত্ত্বের স্বাদ পাওয়া যাবে।nসর্বোপরি, এ যেন চিন্তাধারায় এক আলোর মশাল।
Reviews
There are no reviews yet.