“আঁধার মানবী” বইয়ের গল্পাংশঃ :nটোকাই:nনেত্রকোনা রেলষ্টেশনের বসার জায়গাগুলোর অবস্থা কাহিল। সবগুলোই টোকাই আর হকারদের দখলে। জামিল অনেক খুঁজেটুজে একটাতে বসে পড়ল। ট্রেন আসতে আরো একঘন্টা লেট হবে। জামিলের পাশের চেয়ারগুলোতে তেরো চৌদ্দ বছর বয়সি দু’টা টোকাই বসে বসে বাদাম খাচ্ছে। ওদেরকে দাওয়াত দেয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে টোকাইরা দ্বীনের আলো থেকে বঞ্চিত। এদের নিয়ে ভাবার কেউ নেই। জামিল ডাকল,n-‘এই শোনো!’nজামিলের ডাক শুনে একজন তাকাল। অন্যজন একমনে টপাটপ বাদাম সেঁটেই যাচ্ছিল।n-‘ছার। কিছু কইবেন?’n-‘তোমাদের নাম কী?’n-‘আমার নাম টিপু। এইডার নাম মন্টু।’n-‘তোমরা নামাজ পড়?’nমন্টুর বাদাম খাওয়া শেষ। সে চুপ করে তাকিয়ে আছে। টিপু বলল,n-‘না পরিনাহ। আব্বায় অই পরেনা! আমি ত পোলাপাইন।’n-‘তোমার আব্বা কি করে?’n-‘কিছুই করে না। ঘুরে আর খায়। তয় একটা কাম করে! খালি জুয়া খেলে।’n-‘বলো কি! জুয়া খেলা তো ভালো কাজ না। তোমরাও খেল নাকি?’nমন্টুর এবার জবান খুলেছে। সে বলল,n-‘আমরা এইতান খেলিনাহ। কিরকেট খেলি। এই খেলা মজা আছে!’nজামিল বলল,n-‘ক্রিকেট খেলাও খুব ভালো কাজ না। যা হোক, নামাজ কিন্তু পড়তে হবে! তোমাদের উপর নামাজ ফরজ হয়ে গেছে। না পড়লে আল্লাহ দোজখে নিবে।’nটিপু কিছুক্ষন চুপ থেকে বিষয়টা নিয়ে ভাবল। তারপর বলল,n-‘ক্যামনে পইরাম? নামাজ তো পারি না। আপনে হিগাইয়া দ্যান!’nছেলেগুলো সরল ধরনের। সব কিছু অকপটে স্বীকার করে নিচ্ছে। কিছু না জানলেও শিখার আগ্রহ আছে। জামিল ওদের আগ্রহ দেখে খুশি হয়ে বলল,n-‘শিখবে? চল আমরা প্রথমেই অজু করাটা শিখি।’nটোকাই দু’টা জামিলের দিকে মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে থেকে অজু করা শিখছে। নতুন কিছু শেখার আনন্দে ওরা দু’জনই বেশ আনন্দিত। জামিল হাত পা নেড়ে টোকাইদের অজু করা শেখাল। মন্টু ছেলেটা বেশ ট্যালেন্ট। সে একবার দেখেই অজু শিখে ফেলল। টিপু বলল,n-‘হুজুর! আমারে আরেকবার দেখাইয়া দ্যান।’nজামিলের ফোন বাজছে। স্ক্রীণে সেই নাম্বারটা। যেটা থেকে একটা মেয়ে বেশ কয়েকদিন আগে ফোন করে হুমকি দিয়েছিল। বলেছিল, ‘তোর জীবনটা আমি নরক বানিয়ে ছাড়ব।’nnগল্পাংশঃ আঁধার মানবী।
Reviews
There are no reviews yet.